সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

মে, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

রাজকীয় ভুমিদান বলতে কি বোঝ? ভারতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতিকে এর প্রভাব

রাজকীয় ভুমিদান বলতে কি বোঝ? খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতক থেকে সপ্তম শতক পর্যন্ত ভারতীয় অর্থনীতি ও রাজনীতিকে এই ব্যবস্থা কিভাবে প্রভাবিত করেছিল? খ্রিষ্টীয় চতুর্থ থেকে সপ্তম শতক এবং তার পরবর্তীকালে সমগ্র আদিমধ্য যুগ জুড়ে ভারতীয় অর্থনীতি, সমাজ ও রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি ছিল অগ্রাহার তথা রাজকীয় ভুমিদান ব্যবস্থা। মন্দির, দেবালয় বা বৌদ্ধ মঠ এর উদ্দেশ্যে এবং ব্রাহ্মণ পুরোহিতের উদ্দেশ্যে নিষ্কর সম্পত্তি দানের ব্যবস্থা অগ্রাহার নামে পরিচিত। সংখ্যায় কম হলেও ধর্মনিরপেক্ষ ভুমিদানও ছিল। অবশ্য ব্রাহ্মনকে ভুমিদান করার নজির সবচেয়ে বেশি। ভূমিদান দুই প্রকার: কখনো সরাসরি রাজকীয় দান হিসেবে ভূমি হস্তান্তরিত হত। কখনও ব্যক্তিবিশেষ পূণ্য অর্জনের জন্য রাজার থেকে জমি ক্রয় করে দান করতেন। সাধারণত রাজকীয় 'শাসন' হিসেবে ভূসম্পদ হস্তান্তরের ঘটনা উৎকীর্ণ করা হত। ব্রাহ্মণ এর উদ্দেশ্যে দান করা হলে তাকে ব্রহ্মদেও এবং মন্দিরে উদ্দেশ্যে দান করা হলে তাকে দেবদান বলা হত। রাজকীয় জমি দানের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে। মহাভারতে দানধর্ম পর্বে তিন প্রকার দানের কথা বলা হয়েছেঃ হিরণ্যদান, গোদান, এবং পৃথিবীদান...

আকবরের ধর্মনীতির বিবর্তন

আকবরের ধর্মনীতির বিবর্তন আলোচনা কর। মুঘল শাসকদের মধ্যে ধর্ম বিষয়ে সবচেয়ে উদার মানসিকতার অধিকারী ছিলেন আকবর। রাষ্ট্রপরিচালনায় আকবরের পরধর্মসহিষ্ণুতার নীতি সুল-ই-কুল নামে পরিচিত। সুলতানি যুগ থেকে ভক্তি ও সুফিবাদী সাধকেরা যে সমন্বয়বাদী চিন্তাধারার প্রচলন করেছিলেন আকবরের ধর্মনীতি ছিল তারই ফলশ্রুতি। আকবর উপলব্ধি করেছিলেন যে, বিশাল ভারতবর্ষ এর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হল হিন্দু। তাদের সহযোগিতা ছাড়া ভারতবর্ষে শক্তিশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই তার পক্ষে সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ না করে কোন উপায়ও ছিল না। Related posts মহজরনামা || ইবাদতখানা || উলেমা ও আকবর || সম্রাট আকবর আকবর তার প্রথম জীবনে ধর্মভীরু মুসলমান ছিলেন। নিয়মিত রোজা নামাজ পালন করতেন। ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে আজমীর থেকে ফেরার পথে তিনি অম্বরের রাজা ভরমলের কন্যাকে বিবাহ করেন। এরপর থেকেই তিনি এমন কিছু পদক্ষেপ নেন যার মাধ্যমে হিন্দু জনতার মন জয় করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যেই তিনি 1563 খ্রিস্টাব্দে তীর্থযাত্রা কর রদ করেন। পরের বছরই জিজিয়া কর রদ করেন। এই দুটি পদক্ষেপ তাকে রাজপুতদের সমর্থন অর্জনে সাহায্য করেছিল। দ্বিতীয় পর্য...

আকবর কেন ইবাদতখানা গড়ে তোলেন? তার উদ্দেশ্য কতটা সফল হয়?

আকবর কেন ইবাদতখানা গড়ে তোলেন? তার উদ্দেশ্য কতটা সফল হয়? আকবরের ধর্মনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল ইবাদতখানা স্থাপন। 1575 খ্রিস্টাব্দে আকবর ফতেপুর সিক্রিতে ইবাদতখানা স্থাপন করেন। শেখ আব্দুল্লাহ নিয়াজি নামে এক গুজরাটি সুফি সন্তের উপাসনাস্থলকে কেন্দ্র করে আকবর ধর্ম আলোচনার জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। এই বাড়িই ইবাদৎখানা নামে পরিচিত হয়। সম্রাটের প্রাসাদ থেকে এটা খুব বেশী দুরে ছিল না, যাতে আকবর সহজেই যাতায়াত করতে পারতেন। ইবাদতখানায় জেসুইটসরা 1573 সালের পর থেকে আকবরের ধর্মনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি সকল ধর্মের সার আহরণের কথা ভাবতে থাকেন। বদাউনীর মতে, উজবেক অভিজাতদের পরাজিত করার পর এবং মালব রাজস্থান গুজরাট জয়ের পর সাম্রাজ্যের বিশাল বিস্তার হয়েছিল এবং আকবরের বিরুদ্ধাচরণ করার মত কেউ ছিলেন না। সম্রাটের হাতে সময় ছিল। তাই বিভিন্ন মতাবলম্বী লোকেদের সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইবাদত খানায় ধর্মীয় আলোচনা করার ধারণা নতুন নয়। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খলিফাদের সময় এই ধরনের আলোচনার রেয়াজ ছিল। এমনকি ইসলাম ধর্মে আসার পর মোঙ্গলরাও এই ধরনের আলোচনা করেছে। তৈমুর বংশীয়রাও এই পর...

সমাজতন্ত্র বনাম ধনতন্ত্র

 সমাজতন্ত্র বনাম ধনতন্ত্র Joyanta Roy Chowdhury সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে এগুলো অপপ্রচার। সমাজতন্ত্র কখনো কাউকে কুড়ে করে ফেলে না। বিনা পরিশ্রমে বসে বসে খাওয়ায় না। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে চলে। সেখানে কেউ কাউকে শোষণ করে না। প্রত্যেকের মেধা অনুযায়ী এবং সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করতে হয়। এবং সেই অনুযায়ী সে পারিশ্রমিক পায়। কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশেষ করে পরিষেবার ক্ষেত্রে যেমন স্বাস্থ্য শিক্ষা ইত্যাদি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে। জনগণের এইসব মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সরকার দায় বদ্ধ থাকে। উৎপাদন ক্ষেত্রে যারা সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে তাদের জীবনের মান উন্নয়নের জন্য এই সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সবচেয়ে বড় কথা এখানে ব্যক্তিকে লাগামছাড়া হতে দেয় না। সেখানে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থাকে। ফলে দেশের সম্পদ গুটিকতক মানুষের হাতে জমে গিয়ে অসংখ্য মানুষ দুঃখ দারিদ্রতায় ভোগে না। আমাদের একটা ভুল ধারণা আছে। প্রকৃত শিক্ষার অভাব হলে এই ধারণার জন্ম হয়। যেমন ধরো, একজন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার এদেরকে আমরা সমাজের যে জায়গায় স্থান দেই, কৃষক বা শ্রমিককে তা দেই না। কিন্তু এদের ছাড়া সভ্যতা অচল। আমরা বুঝ...

মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমণের বিবরণ। অভিযানগুলির চরিত্র বিশ্লেষণ

মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমণের বিবরণ দাও। তার অভিযানগুলির চরিত্র বিশ্লেষণ কর। Abdul Mojaffar Mondal, Assistant professor, Sonarpur Mahavidyalaya আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে গজনী ও হেরাতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল ঘুর রাজ্য। ঘুর রাজ্য প্রথমে গজনীর অধীনে ছিল। গজনীর দুর্বলতার সুযোগে ঘুর রাজ্য স্বাধীন হয়ে যায় এবং ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে। এই দুই রাজ্য  পরস্পর বিবাদে লিপ্ত ছিল। এই বিবাদের সূত্র ধরেই 1173 খ্রিস্টাব্দে ঘুর শাসক গিয়াস উদ্দিন মোহাম্মদ  গজনী রাজ্য দখল করেন এবং তিনি তাঁর ভ্রাতা মইজুদ্দিন মহম্মদ বিন সামকে গজনীর শাসনকর্তা নিয়োগ করেন। ইনি ভারতের ইতিহাসে মহাম্মদ ঘুরি নামে পরিচিত। বড় ভাই এর অধীনে নিযুক্ত সেনাপতি হিসাবেই মোহাম্মদ ঘুরি ভারতে অভিযান করেছিলেন।     মামুদের ভারত অভিযানের ঘটনাক্রম : ১১৭৫ খ্রিস্টাব্দে ঘুরি মুলতান অধিকার এবং উচ দুর্গ দখল করে নিজ মনোনীত শাসক নিয়োগ করেন। ১১৭৭ খ্রিস্টাব্দে গুজরাট অভিযান করেন এবং গুজরাটের বাঘেল বংশীয় রাজা ভীমদেবের হাতে দারুন ভাবে পরাস্ত হন। ১১৭৯ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাব আক্রমন করে পেশোয়ার দখল করেন। ১১৮১ খ্রিস্টাব্দে শিয়ালকোটে একটি দ...