সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

Paper 9 SEM-4: লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আকবরের ধর্মনীতির বিবর্তন

আকবরের ধর্মনীতির বিবর্তন আলোচনা কর। মুঘল শাসকদের মধ্যে ধর্ম বিষয়ে সবচেয়ে উদার মানসিকতার অধিকারী ছিলেন আকবর। রাষ্ট্রপরিচালনায় আকবরের পরধর্মসহিষ্ণুতার নীতি সুল-ই-কুল নামে পরিচিত। সুলতানি যুগ থেকে ভক্তি ও সুফিবাদী সাধকেরা যে সমন্বয়বাদী চিন্তাধারার প্রচলন করেছিলেন আকবরের ধর্মনীতি ছিল তারই ফলশ্রুতি। আকবর উপলব্ধি করেছিলেন যে, বিশাল ভারতবর্ষ এর সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হল হিন্দু। তাদের সহযোগিতা ছাড়া ভারতবর্ষে শক্তিশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তাই তার পক্ষে সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ না করে কোন উপায়ও ছিল না। Related posts মহজরনামা || ইবাদতখানা || উলেমা ও আকবর || সম্রাট আকবর আকবর তার প্রথম জীবনে ধর্মভীরু মুসলমান ছিলেন। নিয়মিত রোজা নামাজ পালন করতেন। ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে আজমীর থেকে ফেরার পথে তিনি অম্বরের রাজা ভরমলের কন্যাকে বিবাহ করেন। এরপর থেকেই তিনি এমন কিছু পদক্ষেপ নেন যার মাধ্যমে হিন্দু জনতার মন জয় করতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যেই তিনি 1563 খ্রিস্টাব্দে তীর্থযাত্রা কর রদ করেন। পরের বছরই জিজিয়া কর রদ করেন। এই দুটি পদক্ষেপ তাকে রাজপুতদের সমর্থন অর্জনে সাহায্য করেছিল। দ্বিতীয় পর্য...

আকবর কেন ইবাদতখানা গড়ে তোলেন? তার উদ্দেশ্য কতটা সফল হয়?

আকবর কেন ইবাদতখানা গড়ে তোলেন? তার উদ্দেশ্য কতটা সফল হয়? আকবরের ধর্মনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল ইবাদতখানা স্থাপন। 1575 খ্রিস্টাব্দে আকবর ফতেপুর সিক্রিতে ইবাদতখানা স্থাপন করেন। শেখ আব্দুল্লাহ নিয়াজি নামে এক গুজরাটি সুফি সন্তের উপাসনাস্থলকে কেন্দ্র করে আকবর ধর্ম আলোচনার জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। এই বাড়িই ইবাদৎখানা নামে পরিচিত হয়। সম্রাটের প্রাসাদ থেকে এটা খুব বেশী দুরে ছিল না, যাতে আকবর সহজেই যাতায়াত করতে পারতেন। ইবাদতখানায় জেসুইটসরা 1573 সালের পর থেকে আকবরের ধর্মনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি সকল ধর্মের সার আহরণের কথা ভাবতে থাকেন। বদাউনীর মতে, উজবেক অভিজাতদের পরাজিত করার পর এবং মালব রাজস্থান গুজরাট জয়ের পর সাম্রাজ্যের বিশাল বিস্তার হয়েছিল এবং আকবরের বিরুদ্ধাচরণ করার মত কেউ ছিলেন না। সম্রাটের হাতে সময় ছিল। তাই বিভিন্ন মতাবলম্বী লোকেদের সঙ্গে আলোচনা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইবাদত খানায় ধর্মীয় আলোচনা করার ধারণা নতুন নয়। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খলিফাদের সময় এই ধরনের আলোচনার রেয়াজ ছিল। এমনকি ইসলাম ধর্মে আসার পর মোঙ্গলরাও এই ধরনের আলোচনা করেছে। তৈমুর বংশীয়রাও এই পর...

উলেমা কারা? আকবরের সাথে উলেমা সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কেমন ছিল ?

উলেমা কারা? আকবরের সাথে উলেমা সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কেমন ছিল ? Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya উলেমা কারা? ইসলাম ধর্মের পন্ডিতদের 'উলেমা' বলা হয়। 'উলেমা' শব্দটির উৎপত্তি "এলম"থেকে। এর অর্থ হল জ্ঞান। যে ব্যক্তি জ্ঞানের অধিকারী তাকে 'আলিম' বলা হয়। 'উলেমা' হল 'আলিম' শব্দের বহুবচন। স্ত্রী লিঙ্গে একবচনে 'আলিমা' এবং বহুবচনে 'উলুমা' বলা হয়। এখানে জ্ঞান বলতে প্রাথমিকভাবে ইসলামিক জ্ঞানকেই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ উলেমা শব্দটির দ্বারা মুসলমান ধর্মীয় পন্ডিতদের একটি গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়। মধ্যযুগে ইসলামিক রাজত্বে এই উলেমা গোষ্ঠীর যথেষ্ট প্রভাব ছিল। কোরআন, হাদিস এবং অন্যান্য ইসলামিক সাহিত্যের ওপর দক্ষতা অর্জন করলে তবেই তাকে আলিম উপাধিতে ভূষিত করা হতো। খাতা কলমে এদের কাজ ছিল রাষ্ট্র পরিচালনা এবং ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রে সুলতানকে হালাল (অর্থাৎ শাস্ত্র অনুমোদিত) এবং হারাম (অর্থাৎ অর্থশাস্ত্র অনুমোদিত নয়) বিষয়ে সচেতন করা ও পরামর্শ দেওয়া এবং সাধারণ মানুষকে আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় ক্ষেত্রে যথাযথ নেতৃত্ব দ...

ঝরোকা দর্শন কি?

ঝরোকা দর্শন কি? Abdul Mojaffar Mondal, Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya মুঘল সম্রাটদের প্রত্যহ প্রজাদের দর্শন দেওয়ার প্রথা ঝরোকা দর্শন নামে পরিচিত। আবুল ফজল ও আব্দুল হামিদ লাহোরীর রচনা থেকে জানা যায় আকবর এই ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যাতে তার প্রজারা বিনা বাধায় সম্রাটের কাছে এসে তাদের নিজেদের কথা বলতে পারে। তিনি যখন রাজধানীতে থাকতেন তখন প্রত্যেকদিন সকালে 'খোয়াবগাহ' অর্থাৎ রাতে তিনি যে গৃহে ঘুমাতেন তার বাইরের বারান্দায় এসে প্রজাদের কথা শোনার জন্য দাঁড়াতেন। বদাউনি অবশ্য লিখেছেন হিন্দুরা সম্রাটকে মর্ত্যে ঈশ্বরের প্রতিনিধি ভেবে ভক্তি প্রদর্শন করত। সেই ভক্তি নিবেদন স্বরূপ তারা প্রত্যহ সম্রাটের দর্শন পেতে চাইতেন এবং দর্শন পেলেই তবে সকালের জল গ্রহণ করতেন। আকবর এবং জাহাঙ্গীর ঝরোকা দর্শন-এ প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা সময় দিতেন। ইউরোপীয় পর্যটকদের বিবরণ থেকে জানা যায় জাহাঙ্গীর ঝরোকা দর্শনের শুরুতে উদীয়মান সূর্যকে অভিবাদন জানাতেন। তারপর মনসবদার এবং সাধারন প্রজা বাদশার জয়ধ্বনি করতেন। এরপর তিনি প্রজাদের অভাব-অভিযোগ শুনতেন। জাহাঙ্গীর এভাবেই দ্রুত কিছু বিবাদের বিচার করে খ্যাতি লা...

হারেম বলতে কি বোঝ? মুঘল হারেমের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

হারেম বলতে কি বোঝ? মুঘল হারেমের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, sonarpur Mahavidyalaya মুঘল যুগের ইতিহাস চর্চায় সবচেয়ে জল্পনা এবং কৌতূহলের বিষয় হল মুঘল হারেম। রাজদরবারের মহিলা এবং তাঁদের সখি ও সহযোগিনীদের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট স্থান 'হারেম' নামে পরিচিত। হারেম শব্দের উৎপত্তি আরবি শব্দ 'হারাম' থেকে, যার অর্থ নিষিদ্ধ। মুঘল রমণীদের বসবাসের স্থানে বিশেষ কারন ছাড়া, যেমন: শিক্ষা ও চিকিৎসা, পরপুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। হারেমের তুর্কি প্রতিশব্দ সেরাগলিও, পারসিক প্রতিশব্দ জেনানা, এবং সংস্কৃত প্রতিশব্দ অন্ত:পুর। মুঘল হারেমের ব্যাপারে খুবই অল্পসংখ্যক তথ্য পাওয়া যায়। কোন প্রত্যক্ষ বিবরণ নেই। যেটুকু পাওয়া যায় তার প্রধান উৎস ইউরোপীয় পর্যটকদের কাহিনি, যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের মনগড়া কথা লিখে গেছেন এবং সেগুলিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যেখান থেকে সত্য উদ্ধার করা সহজ নয় । অনেকেই বলে থাকেন যে, সম্রাটের হেরেমের সব মহিলাই তাঁর স্ত্রী, উপপত্নী, নর্তকী, বাইজি, গায়িকা ও বাঁদি। এই ভাবনা সঠিক নয়। এই ধরনের মহিলা অবশ্যই থাকতেন। ...