সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

এপ্রিল, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রাচীন ভারতে অস্পৃশ্যতার ধারণা কিভাবে গড়ে ওঠে?

প্রাচীন ভারতে অস্পৃশ্যতার ধারণা কিভাবে গড়ে ওঠে? Abdul Mojaffar Mondal, Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya জাতিপ্রথার সঙ্গে অস্পৃশ্যতাকে এক করে দেখার একটা প্রবণতা আমাদের সমাজে প্রচলিত। কিন্তু অস্পৃশ্যতার সঙ্গে জাতিপ্রথার কোন কার্যকারণ সম্পর্ক নেই এবং অস্পৃশ্যতা জাতিপ্রথার কোনও পরিনামও নয়। ভারতের জাতি কাঠামোয় একের সঙ্গে অন্যের পার্থক্য স্বীকৃত এবং প্রতিটি জাতিরই-- তা সে ব্রাহ্মণই হোক আর ডোমই হোক-- নিজস্ব ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত। জাতি কাঠামোয় যাদের স্থান বেশ উঁচুতে তারাও এক পঙক্তিতে ভোজন করে না। এই মনোভাবের পেছনে সম্ভবত পবিত্রতা অপবিত্রতা বোধ সংক্রান্ত কয়েকটি বিচিত্র ধারণা বর্তমান। মোটামুটিভাবে বলা যায় যে, মৃত্যু, ক্ষয়, দৈহিক পরিতক্ত সামগ্রী, রোগ, অপরিচ্ছন্নতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে এখানে পবিত্রতা-অপবিত্রতার ধারণা গড়ে উঠেছে। জীবন যেহেতু পবিত্র সেহেতু জীবনহানিকর কোন পেশা, যেমন শিকার, অপবিত্র। মৃত জীব স্বাভাবিকভাবেই তাই অপবিত্র এবং যেসব মানুষেরা মৃত জীবের চামড়া, নাড়িভুঁড়ি ইত্যাদি নিয়ে কাজকর্ম করে বা কসাইয়ের কাজ করে তাদের পেশা অপবিত্র। আবার রজস্বলা নারী, সে যতই নিকট আত্...

উলেমা কারা? আকবরের সাথে উলেমা সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কেমন ছিল ?

উলেমা কারা? আকবরের সাথে উলেমা সম্প্রদায়ের সম্পর্ক কেমন ছিল ? Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya উলেমা কারা? ইসলাম ধর্মের পন্ডিতদের 'উলেমা' বলা হয়। 'উলেমা' শব্দটির উৎপত্তি "এলম"থেকে। এর অর্থ হল জ্ঞান। যে ব্যক্তি জ্ঞানের অধিকারী তাকে 'আলিম' বলা হয়। 'উলেমা' হল 'আলিম' শব্দের বহুবচন। স্ত্রী লিঙ্গে একবচনে 'আলিমা' এবং বহুবচনে 'উলুমা' বলা হয়। এখানে জ্ঞান বলতে প্রাথমিকভাবে ইসলামিক জ্ঞানকেই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ উলেমা শব্দটির দ্বারা মুসলমান ধর্মীয় পন্ডিতদের একটি গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়। মধ্যযুগে ইসলামিক রাজত্বে এই উলেমা গোষ্ঠীর যথেষ্ট প্রভাব ছিল। কোরআন, হাদিস এবং অন্যান্য ইসলামিক সাহিত্যের ওপর দক্ষতা অর্জন করলে তবেই তাকে আলিম উপাধিতে ভূষিত করা হতো। খাতা কলমে এদের কাজ ছিল রাষ্ট্র পরিচালনা এবং ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রে সুলতানকে হালাল (অর্থাৎ শাস্ত্র অনুমোদিত) এবং হারাম (অর্থাৎ অর্থশাস্ত্র অনুমোদিত নয়) বিষয়ে সচেতন করা ও পরামর্শ দেওয়া এবং সাধারণ মানুষকে আধ্যাত্মিক বা ধর্মীয় ক্ষেত্রে যথাযথ নেতৃত্ব দ...

ঝরোকা দর্শন কি?

ঝরোকা দর্শন কি? Abdul Mojaffar Mondal, Assistant Professor, Sonarpur Mahavidyalaya মুঘল সম্রাটদের প্রত্যহ প্রজাদের দর্শন দেওয়ার প্রথা ঝরোকা দর্শন নামে পরিচিত। আবুল ফজল ও আব্দুল হামিদ লাহোরীর রচনা থেকে জানা যায় আকবর এই ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যাতে তার প্রজারা বিনা বাধায় সম্রাটের কাছে এসে তাদের নিজেদের কথা বলতে পারে। তিনি যখন রাজধানীতে থাকতেন তখন প্রত্যেকদিন সকালে 'খোয়াবগাহ' অর্থাৎ রাতে তিনি যে গৃহে ঘুমাতেন তার বাইরের বারান্দায় এসে প্রজাদের কথা শোনার জন্য দাঁড়াতেন। বদাউনি অবশ্য লিখেছেন হিন্দুরা সম্রাটকে মর্ত্যে ঈশ্বরের প্রতিনিধি ভেবে ভক্তি প্রদর্শন করত। সেই ভক্তি নিবেদন স্বরূপ তারা প্রত্যহ সম্রাটের দর্শন পেতে চাইতেন এবং দর্শন পেলেই তবে সকালের জল গ্রহণ করতেন। আকবর এবং জাহাঙ্গীর ঝরোকা দর্শন-এ প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা সময় দিতেন। ইউরোপীয় পর্যটকদের বিবরণ থেকে জানা যায় জাহাঙ্গীর ঝরোকা দর্শনের শুরুতে উদীয়মান সূর্যকে অভিবাদন জানাতেন। তারপর মনসবদার এবং সাধারন প্রজা বাদশার জয়ধ্বনি করতেন। এরপর তিনি প্রজাদের অভাব-অভিযোগ শুনতেন। জাহাঙ্গীর এভাবেই দ্রুত কিছু বিবাদের বিচার করে খ্যাতি লা...

হারেম বলতে কি বোঝ? মুঘল হারেমের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

হারেম বলতে কি বোঝ? মুঘল হারেমের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। Abdul Mojaffar Mondal Assistant Professor, sonarpur Mahavidyalaya মুঘল যুগের ইতিহাস চর্চায় সবচেয়ে জল্পনা এবং কৌতূহলের বিষয় হল মুঘল হারেম। রাজদরবারের মহিলা এবং তাঁদের সখি ও সহযোগিনীদের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট স্থান 'হারেম' নামে পরিচিত। হারেম শব্দের উৎপত্তি আরবি শব্দ 'হারাম' থেকে, যার অর্থ নিষিদ্ধ। মুঘল রমণীদের বসবাসের স্থানে বিশেষ কারন ছাড়া, যেমন: শিক্ষা ও চিকিৎসা, পরপুরুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। হারেমের তুর্কি প্রতিশব্দ সেরাগলিও, পারসিক প্রতিশব্দ জেনানা, এবং সংস্কৃত প্রতিশব্দ অন্ত:পুর। মুঘল হারেমের ব্যাপারে খুবই অল্পসংখ্যক তথ্য পাওয়া যায়। কোন প্রত্যক্ষ বিবরণ নেই। যেটুকু পাওয়া যায় তার প্রধান উৎস ইউরোপীয় পর্যটকদের কাহিনি, যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের মনগড়া কথা লিখে গেছেন এবং সেগুলিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যেখান থেকে সত্য উদ্ধার করা সহজ নয় । অনেকেই বলে থাকেন যে, সম্রাটের হেরেমের সব মহিলাই তাঁর স্ত্রী, উপপত্নী, নর্তকী, বাইজি, গায়িকা ও বাঁদি। এই ভাবনা সঠিক নয়। এই ধরনের মহিলা অবশ্যই থাকতেন। ...